চ্যানেল হিন্দুস্তান ব্যুরো।
অধীর সভাপতি হতেই বোমা ফাটালেন যুব কংগ্রেসের সহঃ সভাপতি রোহন মিত্র (Rohan Mitra)। বুধবার রাতেই অধীরের প্রদেশ কংগ্রেস (Congress) সভাপতি হওয়ার খবর প্রকাশ পায়। বৃহস্পতিবার সকালে রোহন বলেন, অধীর বাবু আবার সভাপতি হয়েছেন, এটা অবশ্যই আনন্দের খবর। তাঁর মত যোগ্য নেতা দল কে সঠিক পথে চালনা করবেন। এরপরেই রোহনের সংযোজন, অধীরবাবুর কাছে একটি অনুরোধ, তিনি যেন নিজে সরাসরি দল পরিচালনা করেন। কোনও অরাজনৈতিক মাধ্যমের মারফৎ তিনি যেন দলের নেতা কর্মীদের কোনও নির্দেশ না পাঠান।
রোহনের এই বক্তব্য বিগত সময়ে অধীরের সভাপতি থাকাকালীন সময়কাল কে ইঙ্গিত করছে। সে সময় অধীর চৌধুরীর (Adhir Chowdhry) দল পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রধান যে অভিযোগ টি উঠেছিল তা হল তিনি তাঁর স্ত্রী অতসী দেবী কে দিয়ে দল পরিচালনা করেন। বিভিন্ন নেতাদের বিবিধ নির্দেশ পাঠান অতসী দেবী। এই অভিযোগে সে সময় দলের বহু নেতা বসে গেছিলেন কিংবা দল ছেড়ে দিয়েছিলেন বলেও খবর।
সে সময় আরও একটি অভিযোগ উঠেছিল অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ টি শতাব্দী প্রাচীন দলের গৌরবেরও পরিপন্থী। তা হল তাঁর ‘শাসনকালে’ রাজ্য কংগ্রেসের প্রধান দফতর, বিধান ভবনের কর্মচারীরা বেতন পান নি। তাঁর বক্তব্যে এই বিষয়টিও উল্লেখ করেন রোহন। বলেন, কর্মচারীরা যেন ঠিক মত বেতন পান, অধীরবাবুর থেকে এটাও প্রত্যাশা।
রোহনের এই বক্তব্যের পর দলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। বর্ষীয়ান নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য এবং দেবপ্রসাদ রায় এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন। তাঁদের সিনিয়রিটি অনুযায়ী দু’জনেই প্রত্যাশিত ভাবে রোহনের বক্তব্যের পক্ষে বা বিপক্ষে দাঁড়ান নি। দেবপ্রসাদ রায় সরাসরি বলেছেন, ‘অধীরের বিরুদ্ধে যে অভিযোগের কথা রোহন উল্লেখ করেছেন, সেই অভিযোগের বাস্তবিকতা নিয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না।’ রাজনৈতিক মহলের মতা দেবপ্রসাদ রায়ের এই মন্তব্যে তিনি অভিযোগের বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইছেন। উল্টে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, দলের সভাপতি কে এই প্রশ্ন করার এক্তিয়ার কি যুব কংগ্রেসের সহঃ সভাপতি রোহনের আছে? যদিও রোহনের ঘনিষ্ঠ মহল বলছে, প্রতিবাদের ভাষা কবে আর এক্তিয়ার মাথা ঘামিয়েছে! প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি ও রাজ্য সভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য অধীর কে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনিও রোহনের কথার সরাসরি উত্তর না দিয়ে বলেছেন, ‘দলের শীর্ষ নেতৃত্ব অধীর কে দায়িত্ব দিয়েছেন। অধীর যদি আমাদের ডাকেন তাহলে দল পরিচালনার কাজে আমরা তাঁকে সহযোগিতা করব।’ তিনি আরও বলেন, ‘আশা করি সকল কে সঙ্গে নিয়েই চলবেন অধীর।’
রোহন ঘনিষ্ঠ এক যুব নেতার কথায় ‘প্রদীপ দা বা মিঠু দা (দেবপ্রসাদ রায়) কেউই রোহনের কথা অস্বীকার করতে পারলেন না। বরং এক্তিয়ারের প্রশ্ন তুলে আসল বিষয় টা এড়িয়ে গেলেন মিঠু দা।’রোহন অবশ্য এই নিয়ে আর কোনও কথা বলেন নি। তাঁর ছোট্ট বক্তব্য, যা বলেছি কংগ্রেসের স্বার্থেই বলেছি।