Home / TRENDING / হিন্দু মরে মরুক, আসুন দিলীপ ঘোষের পায়ে পড়ি

হিন্দু মরে মরুক, আসুন দিলীপ ঘোষের পায়ে পড়ি

দেবক বন্দ্যোপাধ্যায়:

এই মুহুর্তে রাজ্যে সবচেয়ে ক্ষমতাবান ব্যক্তি কে? কি বলছেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? আপনি কি বলেন মুকুল রায়? জেনে রাখুন ভাই আপনারা দুজনেই ভুল। মমতার কথার পান থেকে চুন খসলে সমালোচনা, ব্যঙ্গ, বিদ্রূপ, টিপ্পনির ঝড় বয়ে যায়। আর মুকুল রায়? প্রতিদিন পরীক্ষা দিচ্ছেন, প্রায়শঃই উত্তীর্ণ হচ্ছেন আর তাকিয়ে দেখছেন মেডেলের পর মেডেল পরছেন আর একজন।

খোলাখুলি বলি, মমতা বা মুকুল, সৌরভ বা প্রসেনজিত নয়, বাংলা বাজারে এখন সবচেয়ে ক্ষমতাবান ব্যক্তির নাম দিলীপ ঘোষ। আজ্ঞে, রাজ্য বিজেপির সভাপতি, চাচার মতো কিংবদন্তি বিধায়ককে হারিয়ে বিধানসভার সদস্য হওয়া, অধুনা মেদিনিপুর থেকে সংসদে যাওয়া একদা সঙ্ঘের প্রচারক দিলীপ ঘোষই এখন রাজ্যের সবচেয়ে ক্ষমতাবান মানুষ। রাজনীতির প্যাঁচে পড়ে তৃণমূল তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুলছে না। তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা, যাঁরা বিশেষ বিশেষ কারনে রে রে করে ওঠেন তাঁরাও তাঁদের বিশেষ কারন না পেয়ে চুপ। এমনকি স্পষ্ট কথা বলেন বলে যিনি খ্যাতি অর্জন করেছেন, তিনিও সম্ভবত ঘোষে ঘোষে পরম ভ্রাতৃত্বের পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে মুখ খোলেননি অরূনাভ ঘোষও!

বিষয়টা আরও একটু খোলসা করা দরকার। সম্প্রতি দিলীপ ঘোষের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। কয়েকটি সংবাদমাধ্যম এই ভিডিয়োটির কনটেন্ট নিয়ে খবরও করেছে। ভিডিয়োটিতে দিলীপ ঘোষের মুখ দেখা যাচ্ছে না। পিঠ ও মাথার পিছন দেখা যাচ্ছে। তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে, আরও নির্মম হতে হবে। কৃষ্ণনগরে সংগঠন করার কথা তাঁর ছিল না। ছিল হিন্দুদের। হিন্দুরা জলুবাবুকে হারিয়েছে, চৌবেকেও হারিয়েছে, তাই আরও হিন্দু মরে মরুক।
যতদুর খবর পাওয়া গেছে, নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের কয়েকদিন পরেই নদিয়ায় জনৈক দলীয় কর্মীর বাড়িতে দিলীপ এই কথা বলেছেন। তবে এ কথা সত্য এই ভিডিয়োর সত্যতা চ্যানেল হিন্দুস্তান যাচাই করেনি। আবার এ কথাও সত্য বেশ কিছুদিন কেটে গেলেও বিজেপি বা দিলীপ ঘোষ কেউই এই ভিডিও মিথ্যা এমন দাবিও করেননি।

হিন্দু মরুক, বলেছেন দিলীপ তাই বাঙালির কলম বা কণ্ঠ কিছুই জাগছে না।
বিশ্বহিন্দু পরিষদের নেতারা আড়ালে ক্ষোভ দেখালেও প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। ভাবটা এমন, যেন তাঁরা প্রকাশ্যে বললেই সবাই সব কিছু জেনে যাবে অন্যথায় চাপা থাকবে সত্য।
সঙ্ঘ চুপ। এখনও পর্যন্ত চুপ। যদিও ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় কেউ কেউ বলেছেন, এই ঘটনার প্রকাশ্যে নিন্দা করা উচিত। অন্যথায় দল ও সঙ্ঘ সম্পর্কে বিরূপ ধারণা হবে মানুষের। তাঁদের বক্তব্য একজন ব্যক্তির প্রলাপ কথনের জন্য দল বা সঙ্ঘ কালিমা লিপ্ত হবে এটা কখনওই কাম্য নয়।

তৃণমূলের পক্ষে কিছু বলতে না চাওয়াই স্বাভাবিক। তাঁরা জানেন দিলীপ নয় মুকুল তাঁদের মাথা ব্যথা। আর দিলীপ যদি মুকুলের মাথা ব্যথার কারন হয় তাহলে তৃণমূলের কপালে দিলীপ হলেন অম্রতাঞ্জন।
মমতার বিরুদ্ধে গলা তুলতে যিনি সব সময় প্রস্তুত সেই অরুনাভ ঘোষও দিলীপ প্রসঙ্গে কথা বলতে সাবধানী। অরুনাভ বলেছেন, উনি তো প্রকাশ্যে বলেননি। ব্যক্তিগত আলোচনায় বলেছেন। ব্যক্তিগত আলোচনায় ভোট দেয়নি বলে যে ব্যক্তি হিন্দুদের মৃত্যু কামনা করতে পারে সেই ব্যক্তিকে প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী অরুনাভ ঘোষ আড়াল করছেন দেখে বিস্মিত হতে হয় বৈ কি! উল্টে এক ঘোষের প্রতি আর এক ঘোষের সাবধানবাণী : বিরোধী দল ছাড়াও তাঁর শত্রু আছে।
মানে দোষ দিলীপের নয়। যে ভিডিও করেছে ও ছড়িয়েছে তার!

এমনকি এ হেন বক্তব্যের প্রেক্ষিত খুঁজতে চেয়েছেন অরুনাভ। বলেছেন, উনি (দিলীপ) ক্যাজুয়ালি বলেছেন।
একদিকে তোষননিষ্ঠ তৃণমূল অন্যদিকে দিলীপ ঘোষ।
বেচারা হিন্দু!

Spread the love

Check Also

কেমন হলো, মুখ্যমন্ত্রীর এপিসোডের প্রথম ঝলক ?

সুচরিতা সেন, বিনোদন ডেস্ক রোজ বিকেলে বাংলার প্রতিটি ঘরে বিনোদন শুরু হয় এই শো এর …

বছর শুরুতে শিব দরবারে মিমি

চ্যানেল হিন্দুস্তান, বিনোদন ডেক্স বর্তমানে বেনারস ভ্রমণে ব্যস্ত টলিউড নায়িকা। সেখানকার অলি-গলিতে ঘুরছেন। সদ্য ওটিটি …

রশিদ খানের ফিরে দেখা জীবনধ্যায়

বিনোদন ডেস্ক, সুচরিতা সেন, আবার নক্ষত্রপতন, না ফেরার দেশে চলে গেলেন ওস্তাদ রশিদ খান। গানের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *